শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে ফল উৎসব-২০২৫ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটি গঠন চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই বিএনপির কর্মীকে কারাদণ্ড, প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করে হামলা ভাংচুর : ৮ পুলিশসহ আহত অন্তত ২০ প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় রিকশাচালক গ্রেফতার চাকরিচ্যুত হলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি ঐতিহ্যবাহী মোগলহাট জিরো পয়েন্ট এখন শুধুই স্মৃতি; দর্শনার্থীদের ভিড় সময়ের প্রয়োজনে ও রক্তের বিনিময়ে এনসিপি গঠিত হয়েছে- লালমনিরহাটে এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ; ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন কালের আবর্তে বিলুপ্তির পথে মহিষ ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস পরিদর্শন
পাখিদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ বার্ড এন্ড লাইফ সোসাইটি!

পাখিদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ বার্ড এন্ড লাইফ সোসাইটি!

পাখিদের এখন প্রজনন মৌসুম চলছে। মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন গোত্রীয় ও পরিবারভুক্ত পাখিদের প্রজননকাল। পাখিদের বাসা বাঁধতে এবং ডিম পাড়ার দৃশ্য বসন্ত ঐতিহ্যকে জাগিয়ে তোলে। অনেক পাখি বসন্তে প্রজনন করে এবং ডিম দেয়। তবে বেশ কয়েকটি প্রজাতি গ্রীষ্মে প্রজনন করে না। কিছু শীতের প্রথম দিকে শুরু হয়, কিছু গ্রীষ্মের শেষের দিকে এবং অন্যরা প্রজনন করে সারা বছর ধরে। আমাদের দেশে বড় গাছপালা নির্বিচারে নিধনের ফলে এদেশের আবাসিক পাখিদের প্রজননের জন্য যে আবাস প্রয়োজন তা বিলুপ্ত হচ্ছে। প্রকৃতি ও পরিবেশের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে বিচিত্র প্রজাতির পাখি। কিন্তু পাখিদের আবাসস্থল নিরাপদ থাকছে না। পাখির প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্র দিন দিন শিকারিদের দখলে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া কৃষক ও জেলেদের অসচেতনতার কারণে পাখির অভয়ারণ্য হুমকির মুখে পড়েছে। বৈশাখ মাস থেকে এসব পাখিরা বিশেষ করে ঝুঁটি শালিক, টুনটুনি, ভাত শালিক, দোয়েল, কুটুরে প্যাঁচা, কাঠ শালিক, চড়ুই পাখিরা প্রজনন ঘটায়। এই সময় এসব পাখিদের বাসা বাঁধবার জন্য নির্দিষ্ট জায়গার প্রয়োজন হয়। যেমন বড়সড় গাছের কোটর, নারিকেল গাছের ফোঁকরসহ পুরনো দালানের ভাঙ্গা ভেন্টিলেটার। এই জায়গাগুলোই এ সব পাখিদের বাসা বাঁধবার প্রকৃত স্থান। এ সকল জায়গা পাখিদের জন্য নেই বললেই চলে।

 

পাখির জন্য নিরাপদ প্রজনন ও অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে “পৃথিবীটা পাখিদেরও”, ” আতশবাজি কি করে? বিকট শব্দে পাখি মারে!”, “পাখি প্রেমী ঐক্য গড়ি, পাখি নিধন বন্ধ করি” স্লোগান নিয়ে লালমনিরহাটে বাংলাদেশ বার্ড এন্ড লাইফ সোসাইটি নামক একটি সংগঠন পাখিদের বাসা ও পাখির সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় গাছে গাছে ও বাড়িতে বাড়িতে বাঁধা হয়েছে মাটির পাত্র। সেসব পাত্রে পাখি বাচ্চাও দিবে। পরিবেশবাদী স্থানীয় সংগঠন লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার গাছে গাছে বাড়িতে বাড়িতে পাখির বাসার জন্য মাটির পাত্র বেঁধে দিয়েছে। দেখা গেছে, বিভিন্ন গাছে বাঁধা মাটির পাত্রে পাখি বাসা তৈরি করেছে।

 

বাংলাদেশ বার্ড এন্ড লাইফ সোসাইটি সভাপতি অনুপম রায় রূপক জানান, গাছে বাঁধা মাটির পাত্রে পাখি বাসা তৈরি করায় আমাদের মধ্যে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে সাড়া পড়েছে। গাছে গাছে বাঁধা হয়েছে মাটির পাত্র। লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরের পাশে গাছে বাঁধা মাটির পাত্র রয়েছে। সেই সাথে স্থানীয় তরুণেরা যে সমস্ত গাছে পাখি বাসা বাঁধা মাটির পাত্র দিয়েছে যাতে সে গাছগুলো কাটা না হয় এ দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

তিনি আরও বলেন, এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত পাখিদের প্রজননের সময়। এপ্রিল থেকে বাসা বানাতে শুরু করে পাখি। এক সময় জলাশয় ও ধানখেতে ফাঁদ, জাল, বিষটোপ দিয়ে পাখি শিকার করা হতো। পাখি রক্ষায় সচেতনতামূলক কার্যক্রমের আওতায় লালমনিরহাটের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলা রংপুর ও কুড়িগ্রামে “বাংলাদেশ বার্ড এন্ড লাইফ সোসাইটি” নামক সংগঠনটির উদ্বুদ্ধকরণে উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়াও ভূট্টা ক্ষেতে আগত টিয়া পাখি নিধন চলছে। এ থেকে টিয়া পাখিকে রক্ষা করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

 

অতিক্রম লালমনিরহাটের আহবায়ক মোঃ হেলাল হোসেন কবির, যুগ্ম আহবায়ক মুহিন রায় ও মাসুদ রানা রাশেদ বলেন, বাংলাদেশ বার্ড এন্ড লাইফ সোসাইটির কৃত্রিম বাসা তৈরির এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এর ফলে আমাদের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে। পাখিরা ফিরে পাবে নিরাপদ আবাসস্থল। পাখি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, মানুষের উপকারী বন্ধু। তাই পাখির সুরক্ষায় সবার সহযোগিতা একান্ত কাম্য।

 

পর্যালোচনা করে জানা গেছে, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৭শত ২২টি প্রজাতির পাখির উপস্থিতি নথিভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে কমবেশি ৩শত ৪০টি প্রজাতি আবাসিক। এরা সারা বছর দেশের ভৌগোলিক সীমানায় থাকে এবং বংশবৃদ্ধি করে। বাকি প্রায় ৩শত ৭০টি প্রজাতি পরিযায়ী। অল্প কিছু প্রজাতি বাদে বেশির ভাগ পরিযায়ী পাখি আসে শীতকালে। তার মানে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় ওরা এ দেশে আসে, বাস করে এবং সময়মতো আগের আবাসে ফিরে যায়। এরা পরিযায়ী পাখি নামে পরিচিত। প্রজননের সময় পাখিদের জোড়া বাঁধার আকাঙ্খা, ঘর বাঁধার স্বপ্ন, প্রেম বিনিময় খুবই লক্ষ্যণীয় একটি ঘটনা।

 

উল্লেখ্য যে, ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর লালমনিরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বার্ড এন্ড লাইফ সোসাইটি নামক সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone